অনলাইন ডেস্ক :
হরতাল, অবরোধ, রাজপথে বিক্ষোভ সমাবেশে, সংর্ঘষ-সংঘাত, প্রতিবাদ সভা, লংমার্চ, রোড মার্চ, জনসভা, মহাসমাবেশে, মানববন্ধন, মানবপ্রাচীরসহ রাজপথে নানা ধরণে কর্মসুচি পালনে মধ্যে দিয়ে ব্যস্থ থাকতো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল । বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাম রাজনৈতিক দল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীরা রাজপথে, মাঠে ময়দানে বা বিভিন্ন হলরুমে এই ধরণের কর্মসুচি পালন করতো। কিন্তু ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারীর পর থেকে বাংলাদেশে মুলত মাঠের রাজনীতি হলরুম বন্ধী ও সংবাদ সম্মেলন নির্ভর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে দেশের প্রায় সকল দলের রাজনীতি এখন ভার্চুয়ালে আটকে গেছে।
কিন্তু সম্প্রতি সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনার ছোঁবলে সব কিছুর পাশাপাশি ছন্দপতন ঘরে চিরচেনা রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও । যে রাজনীতি এক সময় রাজপথ থেকে উধাও হয়ে হলরুমে বাবদ্ধ হয়ে পড়েছিলো , সেই রাজনীতি এখন পুরোপুরি র্ভাচুয়াল ও সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি নির্ভর হয়ে পড়েছে। গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মুলত র্ভাচুয়াল পদ্ধতিতে সীমিত পরিসরে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্টিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সহ তাদের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় টানা এক বছর আন্দোলন করার পর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারীর পর থেকে মুলত বিএনপি সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলনে ব্যাকফুটে চলে যায় । এরপর থেকেই দেশের রাজনীতি অনেকটা রাজপথ ছেড়ে বিভিন্ন হলরুম আর সংবাদ সম্মেলন নির্ভর হয়ে পড়ে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দিবস পালন উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় ধরণের জনসভা করলেও বিএনপি ও জাতীয় পার্টি হাতেগণা কয়েকটি জনসভা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় ধরণের একটি সমাবেশ আয়োজন করে।
তবে বিগত পাঁচ বছর ধরে আওয়ামী লীগ , বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ, বাসদ, ওয়ার্কাস পার্টি , আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট, বিভিন্ন বাম ও ইসলামী জোট গুলোর বিভিন্ন শরীক দল রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিভিন্ন সরকারী বেসরকরী মিলনায়তনে দিবস ভিত্তিক কর্মসুচী পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলো দলীয় রাজনীতি। এই সব দলের কাউন্সিল বা সম্মেলন গুলোও হয়েছে বেশিরভাগ বদ্ধ আয়োজনে। এছাড়া বিএনপি সহ ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি ও বিভিন্ন বাম দল প্রায় সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন ইস্যতে তাদের দলীয় অবস্থান তুলে ধরতো। তবে সম্প্রতি করোনার কারণে যেটুকু রাজনৈতিক কর্মকান্ড হলরুমে বা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল গুলো করেেতা তাও এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারী কর্মকান্ডের পাশাপাশি প্রায় আওয়ামী লীগের ও বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্টিত বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখতো। এছাড়া নিয়মিত তিনি গণভবনে নেতাদের সঙ্গে মিটিং করতো। কিন্তু গত তিনমাস ধরে তিনি তা পুরোপুরি বন্ধ রেখেছেন। তবে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে তিনি সরকারী কর্মকান্ডের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদেরও নানা দিক নির্দেশনা দেয়া অব্যাহত রেখেছেন। এই ক্ষেত্রে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরকারী ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও প্রায় প্রতিদিনই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত জনগণ যেমন অবহিত করছেন, ঠিক তেমনি সারাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে র্ভাচুয়া মিটিং করে দলীয় নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওর্য়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেত খান মেনন সহ বিভিন্ন রাজনৈদিক দলের নেতারা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সীমিত পরিসরে রাজনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার পাশাপাশি প্রেস রিলিজে বিবৃতির মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে নিজ নিজ দলের অবস্থান জাতির সামনে তুলে ধরছেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি গত তিন মাসে এক বার স্বশরীরে সংবাদ সম্মেলন করলেও প্রায় তিনি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তবে বাজেট প্রতিক্রিয়া তিনি বনানীতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দিয়েছেন। তাছাড়া এই করোনার মধ্যে তিনি প্রায় বনানীতে তার কার্যালয়ের পাশাপাশি কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসেও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মত বিনিময় করছেন। এছাড়া টেলিফোনে তিনি দেশের জেলা উপজেলা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে কয়েক দফা নিজ দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেছেন। নিজে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এছাড়া নিয়মিত প্রেস রিলিজের মাধ্যমে সরকারের নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে নিজের ও দলের বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন।
বাম দল ও ইসলামী দলগুলো বেশির ভাগ প্রেস রিলিজৈর মাধ্যমে সরকারের নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে নিজ নিজ দলের অবস্থান তুলে ধরছেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”
- » ফরহাদনগরে ছাত্রদল নেতা জিয়া উদ্দিনের ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পথে ঘুরছে বৃদ্ধা দুই অসহায় বোন